অনলাইনে শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধনে ভোগান্তি নিরসনের দাবী সিপিবি’র
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের সরকারি নির্দেশনা নিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভোগান্তির বিষয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, চট্টগ্রাম জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমরেড আব্দুল নবী ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক অশোক সাহা একটি যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা জানতে পেরেছি, সরকার সম্প্রতি মাধ্যমিক পর্যায়ের অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিট আইডি কার্ড তৈরির কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এজন্য সকল শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের নম্বর ছাড়া হাতে লেখা কোনো নম্বর ইউনিক কার্ডের জন্য তৈরি নির্ধারিত ছকের জন্য গ্রহণ করা হচ্ছে না।
কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সরকারের নির্দেশনা মেনে এই অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কার্ড পেতে গিয়ে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে লাখো শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন কার্ড পেতে এই করোনাকালের মধ্যেও কর্মস্থল ছেড়ে ছুটতে হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে, এক জেলা থেকে আরেক জেলায়। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, পৌর মেয়রের কার্যালয়ে ধর্ণা দিতে হচ্ছে।
আমাদের কাছে তথ্য আছে, হঠাৎ করে জন্ম নিবন্ধনের চাহিদা বেড়ে যাবার সুযোগ নিচ্ছে একশ্রেণীর দুর্নীতিপরায়ণ জনপ্রতিনিধি ও তাদের কার্যালয়ের কর্মচারিরা। সরকার নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেশি টাকা দিলে দ্রুত পাওয়া যাচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা না দিলে নানা ধরনের ভোগান্তিতে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধনের জন্য তাদের মা-বাবার জন্ম নিবন্ধন কার্ড দাবি করা হচ্ছে। অথচ অনেক অভিভাবকের জন্ম নিবন্ধন কার্ড নেই। অনেকেই আছেন অভিভাবকহীন। তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
আবার জন্ম নিবন্ধনের সময় হোল্ডিং নম্বর দিতে হচ্ছে। হোল্ডিং ট্যাক্স বাকি থাকলে অনেক জায়গায় নিবন্ধন করানো হচ্ছে না। দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। অনেক অভিভাবক চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের আয় কমেছে। এ অবস্থায় হঠাৎ করে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত তাদের কাছে মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে পড়েছে।
আমরা জানি না, সরকার করোনার এই দুঃসময়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেন নিল ? শিক্ষা মন্ত্রণালয় কী চিন্তা করে, কাদের পরামর্শে চলে- সেটা বোঝা যায় না। তাদের কর্মকাণ্ড আদৌ শিক্ষার্থীদের পক্ষে নয়। বরং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড দেখলে গৎবাঁধা আমলাতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডই মনে হয়।
আমরা সরকারের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন প্রদানের নির্দেশনা বাতিল করে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।