পশ্চিম বঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ না-বলায় লাথি, ঘুষি বালককে
চায়ের দোকানের সামনে ঘুরছিল বছর দশেকের বালক। প্রথমে খানিক মজার ছলে দোকানের মালিক মহাদেব প্রামাণিক তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলেন। বালক তার জবাবে ‘খেলা হবে’ বলতেই মাথায় রক্ত চড়ে যায় মহাদেবের।
অভিযোগ, ছেলেটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া করে ধরে এলোপাথাড়ি লাথি, চড়, ঘুষি চালাতে থাকেন তিনি। এক সময় অজ্ঞান হয়ে যায় ছেলেটি। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে নদিয়া জেলার ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে প্রথমে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নদিয়ার শান্তিপুর থানার ফুলিয়াপাড়া। অভিযুক্তের স্ত্রী মিঠু প্রামাণিক বিজেপির ২৯ নম্বর মণ্ডলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। ২০১৮ সালে তিনি বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েত থেকে বিজেপির প্রার্থীও হয়েছিলেন। অভিযুক্ত মহাদেববাবুর চায়ের দোকান রয়েছে শান্তিপুর থানার ফুলিয়াপাড়ায়। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক। স্ত্রী মিঠু প্রামাণিক বলেন, “আমরা বিজেপি করি। তবে এটা আমার স্বামীর ভুল হয়ে গিয়েছে।”
ঘটনার প্রতিবাদে ফুলিয়াপাড়া এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা কল্পনা বিশ্বাস, জাহিদ শেখ-রা জানান, জখম বালকের মা মারা গিয়েছেন। এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতেই সে পালা করে খাওয়া-দাওয়া করে।
যুব তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায়, বেলগড়িয়া ১ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সুনীল বসাক, বেলগড়িয়া ২ পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক মণ্ডল দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, “সংবাদমাধ্যমে যা শুনেছি তা যদি সত্যি হয় তা হলে ঘটনাটি নিন্দাজনক। আমাদের দল এই ধরনের কাজকে অনুমোদন করে না।” আর শান্তিপুরের তৃণমূল প্রার্থী অজয় দে বলেন, “দলের লোক একটা বাচ্চাকে এ ভাবে মারতে পারে তাদের নিন্দার ভাষা নেই।”
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা