আদিবাসী শব্দ অন্তর্ভুক্তির চক্রান্তের বিরুদ্ধে পিসিসিপি’র নিন্দা ও প্রতিবাদ

- Advertisement -

আদিবাসী শব্দ অন্তর্ভুক্তির চক্রান্তের বিরুদ্ধে পিসিসিপি’র নিন্দা ও প্রতিবাদ

 

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ কর্তৃক জমা দেওয়া প্রতিবেদনে গণমাধ্যম নীতিমালায় “আদিবাসী” শব্দের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে, যা সরাসরি বাংলাদেশের সংবিধান, জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর থেকে এই ষড়যন্ত্রমূলক সুপারিশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ২৩ শে মার্চ রবিবার সকালে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়া হয়।

 

বিবৃতিতে পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৩ক অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে “ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী” বা “উপজাতি” হিসেবে উল্লেখ করতে হবে, “আদিবাসী” নয়। ২০১১ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত প্রস্তাবেও “আদিবাসী” শব্দের ব্যবহার সংবিধানবিরোধী বলে স্বীকৃত হয়েছে। তা সত্ত্বেও এই শব্দ ব্যবহারের সুপারিশ করা দেশের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত ছাড়া কিছুই নয়।

 

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর তৎকালীন পার্বত্য চুক্তিতে উপজাতিরা ‘আদিবাসী’ হিসেবে দাবি না করে বরঞ্চ নিজেদের উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করে চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছিলো। তাহলে- চুক্তির এত বছর পরে তারা ও কিছু কুচক্রী মহল আবার এখন নিজেদেরকে ‘আদিবাসী’ দাবি করে কেন? কুচক্রী মহলের এই দাবি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের পূর্বাভাস। পার্বত্য চুক্তির সম্পাদিত হওয়ার ফলে উপজাতি কোটায় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, উপজাতি কোটায় শিক্ষা-দীক্ষা-চাকরি ও অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার পরে এখন উপজাতি ও কিছু ষড়যন্ত্রকারী কুচক্রী মহল নতুন করে ‘আদিবাসী’ দাবি করার মাধ্যমে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার ভয়াবহ ষড়যন্ত্র।

 

 

পিসিসিপি বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে:

১. গণমাধ্যম নীতিমালায় “আদিবাসী” শব্দ যুক্ত করার সুপারিশ একটি ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোনো জনগোষ্ঠী আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো ভারত, মিয়ানমার ও তিব্বতের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে। সুতরাং তাদের “আদিবাসী” হিসেবে পরিচিত করা ইতিহাসবিকৃতির শামিল।

 

২. আন্তর্জাতিক মহলে বিচ্ছিন্নতাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। “আদিবাসী” শব্দটি স্বীকৃতি পেলে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার সুযোগ পাবে, যা দেশের অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

 

৩. বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের হাতিয়ার বানানোর চেষ্টা চলছে। কিছু বিদেশি সংস্থা ও এনজিও দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। কামাল আহমেদ ও তার মতো ব্যক্তিরা এই চক্রান্তের অংশীদার কিনা, তা তদন্ত করা প্রয়োজন।

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান:

 

গণমাধ্যম নীতিমালায় “আদিবাসী” শব্দ সংযোজনের সুপারিশ দ্রুত প্রত্যাখ্যান করতে হবে। অন্যথায় পিসিসিপি দুর্বার আন্দোলন এর ডাক দিবে।

 

রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালানো ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম যেন কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা না দেয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি দেশপ্রেমিক জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। মাতৃভূমির অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য পিসিসিপি সর্বদা প্রস্তুত।

মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত পোস্ট:

লংগদু সেনা জোনের অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভারতীয় পণ্য ও অস্ত্র উদ্ধার

রাঙামাটির লংগদু (তেজস্বী) সেনা জোনের সদস্যদের সফল অভিযানে বাঘাইছড়ি উপজেলার লাইলাঘোনা এলাকায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভারতীয় পণ্যসহ একটি...

খাগড়াছড়ি চলমান অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডে লিপ্ত উপজাতি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও সেনা ক্যাম্প পূণঃস্থাপনের দাবীতে মানববন্ধন

ডেস্ক রিপোর্টঃ   খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সময়ে সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফ তাদের পুরনো নীলনকশা অনুযায়ী আবারও পাহাড়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত...

কাপ্তাই হ্রদে নৌকাডুবি: সেনাবাহিনীর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সফল উদ্ধার অভিযান

ডেস্ক রিপোর্টঃ রাঙামাটি, ০১ অক্টোবর ২০২৫ (বুধবার): গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতের আকস্মিক ঝড়ো হাওয়ায় রাঙামাটির লংগদু অঞ্চলের বিএফডিসি ঘাট,...

ভারতের মদদে পাহাড়ে ইউপিডিএফের তাণ্ডব

ডেস্ক রিপোর্টঃ খাগড়াছড়িতে এক মারমা কিশোরীকে অপহরণ করে কথিত ধর্ষণের অভিযোগে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক...